নারায়ণগঞ্জ মহানগর খেলাফত মজলিসের নেতা জাহিদ হাসান বলেছেন, তারা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। তারা বলছিল আমাকে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেবে। আপনারা জানেন মেধাবী ছাত্র ত্বকীকে হত্যা করে শীতলক্ষ্যায় লাশ ফেলে দিয়েছিল ওসমান পরিবারের সন্ত্রাসীরা। সাত খুন করে শীতলক্ষ্যায় লাশ ফেলে দিয়েছিল এসকল সন্ত্রাসীরা।
সেই ওসমান পরিবারের, বিশেষত শামীম ওসমানের পা চাটা দালাল এই মাওলানা ফেরদৌস। ওরা গতকাল আমাকে হত্যা করে শীতলক্ষ্যায় লাশ ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল। তবে আল্লাহর রহমতে আমি পপুলার হসপিটালে আশ্রয় নেই। আমার দলীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিক ভাইয়েরা তাৎক্ষণিক ভাবে উপস্থিত হয়ে আমাকেও রক্ষা করে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে খেলাফত মজলিসের নেতা জাহিদ হাসানের ওপর হামলার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
এতে অংশ নিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় থাকা বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে হামলাকারী হিসেবে হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের স্থগিত কমিটির সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানকে ওসমান পরিবারের প্রকাশ্য দালাল উল্লেখ করে তার দ্রুত বিচার ও গ্রেপ্তার দাবি করেন। তারা সকলেই তাদের বক্তব্যে ফেরদাউসুর রহমানকে ভারতের ও আওয়ামীলীগের প্রেতাত্মা ওসমান পরিবারের দোসর হিসেবে অখ্যা দেন। ব্যানারেই একই বিষয় তুলে ধরা হয়।
একই সাথে বক্তারা হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেন।
হামলায় আহত জাহিদ তার বক্তব্যে বলেন, গতকাল রাত আটটায় আমি চাষাঢ়া শহীদ মিনারের সামনে একজনের সাথে কথা বলছিলাম। আমার সাথে আমার এক বন্ধু ছিল। সেসময় হঠাৎ আমার ওপর হামলা করা হয়। আমাকে ঘুষি লাথি মারতে থাকে। রাস্তায় অনেক মানুষ ছিল। আমি তাদের প্রতি আমাকে বাঁচানোর আকুতি জানালেও তাদের দোর্দণ্ড প্রতাপের কারনে আমাকে বাঁচাতে পারেনি। আমাকে মারতে মারতে পপুলার হসপিটাল পর্যন্ত নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে শামীম ওসমানের দালাল এই ফেরদৌস আমাকে ফোন করে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। তার সহযোগী কামাল উদ্দিন দায়েমিও আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এগুলোর ফোন রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে। তারা আমাকে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া করার হুমকি দিয়েছিল। আমরা কেউ নারায়ণগঞ্জে ভেসে আসিনি। আমরা এই নারায়ণগঞ্জে আছি ভবিষ্যতেও থাকবো। প্রয়োজনে রক্ত দেব জীবন দেব। জালেমের সাথে আমরা আপোষ করবো না।
তিনি বলেন, আমার মাথা থেকে ঘাড় ও পিঠসহ পুরে শরীর ব্যাথায় জর্জরিত। আমার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভাল না। এই ছাত্র জনতার সামনে আমি বলতে চাই, কোন জালেমের রক্তচক্ষু আমাকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
এর আগে সোমবার রাতে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ জাহিদের ওপর হামলা চালানো হয়। এসময় হামলা থেকে বাঁচতে দৌড় দিলে তার পিছু নেয় হামলাকারীরা। পরে চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকার পপুলার হসপিটালের তৃতীয় তলায় আশ্রয় নেন জাহিদ।
পরে হামলার খবর পেয়ে পপুলার হসপিটাল থেকে জাহিদকে উদ্ধার করে নগরীর খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায় খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা। রাতে এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।