০৮:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪

কালাম জাকির খোরশেদ জোসেফ নজরে

প্রবীণ ও নবীনদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আলোচনা তুঙ্গে রয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকার আমলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে একাধিক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কেন্দ্র। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি যে কোন সময়ে বিলুপ্ত করতে পারে বলে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।

নতুন কমিটিতে ওয়ান শো ম্যান লিডার থেকে জনগণ ও তৃণমূল পছন্দের নেতাদের মূল্যায়ন করার প্রস্তাব করা হয়েছে কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে। মহানগর বিএনপিতে আবারো আলোচনায় রয়েছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম, কারাবন্দি জাকির খান, সর্বোচ্চ মামলার আসামী কাউন্সিলর খোরশেদ ও যুবদল নেতা জোসেফ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এক সময়ের তুখোড় সাবেক এমপি আবুল কালাম, সাবেক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও তৈমূর আলম খন্দকারকে নিয়ে এখনো আলোচনা রয়েছে। এদের মধ্যে মহানগর বিএনপিতে পদবিহীন হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন আবুল কালাম। জেলা বিএনপি আহবায়ক থেকে সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।

অন্যদিকে নাসিক নির্বাচন অংশ নেয়ায় জেলা বিএনপি আহবায়ক ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাসহ প্রাথমিক পদ থেকে বহিষ্কার হন তৈমূর আলম খন্দকার। দীর্ঘদিন তিনি পদবিহীন থাকলেও গত বছর তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব নির্বাচিত হন। এই তিন নেতা মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিএনপিতে অভিভাবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাঝে এখনো তাদের চাহিদা প্রকাশ্যে দেখা গেছে।

আহবায়ক কমিটির কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাথে একাধিকবার কথা বলেছেন তারেক রহমান। তার কাছে মহানগর বিএনপির প্রতিটি নেতাদের হালনাগাদ রয়েছে। আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর কোন কোন নেতা চাঁদা দাবি ও উত্তোলন করেছে, সকল তথ্য ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা অবগত রয়েছেন।

বর্তমান সময়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে বেধড়ক পিটুনি নিয়েও কেন্দ্রীয় নেতারা জেনেছেন। যার কারণে তিন দিন পর দলের মহাসচিব নিন্দা প্রকাশ করেছেন। বর্তমান আহবায়ক কমিটি নেতৃত্ব নিয়েও তারেক রহমান অবগত রয়েছেন।

জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিতে যাচ্ছেন। জনগণের রায় নিয়ে বিএনপি প্রতিটি আসনে জয়ী হওয়ার কৌশল নিতে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমলে যে কোন কর্মসূচি ও নেতা-কর্মীদের রাজপথে ধরে রাখার জন্য নতুন করে কমিটি সাজাতে যাচ্ছে তারেক রহমান। নারায়ণগঞ্জসহ প্রতিটি জেলা মহানগর কমিটিগুলোতে প্রবীণ ও নবীনদের নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হবে। যাতে কমিটিগুলোতে দ্বন্দ্ব কোন্দল ও বিবেদ সৃষ্টি না হয়।

এর সাথে পদবিহীন ও জেল জুলুম শিকার নেতাদের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে দেয়ার সিদ্ধান্তের দিক ছুটছে কেন্দ্র। নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সর্বোচ্চ মামলার আসামী হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও নাসিক ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার, বহিষ্কৃত নেতা এটিএম কামাল, মনিরুল ইসলাম সজল, রাফিউদ্দিন রিয়াদসহ কয়েকজন নেতা।

নতুন নেতৃত্বে মহানগর বিএনপিতে আলোচনায় রয়েছেন এককভাবে সাবেক এমপি আবুল কালাম। ক্লিন ইমেজের এই নেতা একাধিক বার এমপি হয়েছেন, শহর মহানগর বিএনপির সভাপতি ও আহবায়ক ছিলেন তিনি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে যখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয় তখন সেই প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন হাজী জালালউদ্দিন।

ছিলেন সংসদ সদস্য এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি। তার নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জে বিকাশ লাভ করেছিল বিএনপির রাজনীতি। জালাল হাজীর হাত ধরে রাজনীতিতে পথচলা শুরু হয়েছিল অনেক গুণী রাজনীতিবীদের। জালাল হাজীর মৃত্যুর পর তার ছেলে আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির হাল ধরেন এবং সদর-বন্দর আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বাবার ঐতিহ্য ধরে রেখে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এডভোকেট আবুল কালাম সে সময়ে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে এডভোকেট আবুল কালাম ধীরে ধীরে রাজনীতি থেকে দুরে সরে যেতে থাকেন।

২০১৭ সালে তিনি মহানগর বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন কিন্তু তার নেতৃত্বে মহানগর বিএনপি আন্দোলন সংগ্রামে শৃঙ্খলা থাকলেও তিনি তার বাড়ির চার দেয়ালে বন্দি করে ফেলেন। ফলে সরকার বিরোধী আন্দোলনে মুখ থুবরে পরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি। এর চেয়ে আরও বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছেন মহানগর বিএনপি। আহবায়ক কমিটি ও পদবিহীন একাধিক গ্রুপিং হওয়ার নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কোন্দল ও হামলা মামলায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। তাই এবার প্রবীণ নেতা আবুল কালামের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপি চলতে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে জেলা ছাত্রদলের এক সময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী সভাপতি জাকির খান আলোচনায় এসেছেন। তার বাবা দৌলত খান তৎকালীন টানবাজার পতিতালয়ের গডফাদার ছিলেন বলে আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করেন। প্রায় ২০ বছর পলাতক জীবনের পর গত বছর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন তিনি। জাকির খানকে মহানগর বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখার জন্য মিছিল মিটিংও করছে তার সমর্থকরা।

নারায়ণগঞ্জের বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক সময়ের প্রাণকেন্দ্র ছিল নাসিক ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব থেকে আহবায়ক ও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক পদে দীর্ঘদিন।

টানা আওয়ামী লীগ সরকার আমলে আন্দোলন সংগ্রামে প্রায় ৯৩টির অধিক মামলার আসামী হয়েছেন খোরশেদ। এমনকি নাসিক নির্বাচনে তাকে পরাজিত করার জন্য মাঠে নামেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারপরও খোরশেদের জনপ্রিয়তায় সর্বোচ্চ ভোটে জয়ী হন তিনি। মহানগর যুবদলের একাধিক পদে দায়িত্ব পালনকালে শহর বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের শক্তিশালী রূপ দিয়েছেন খোরশেদ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরও মহানগর যুবদলের সভাপতি দায়িত্ব পালন নিয়ে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। বর্তমানে খোরশেদের বড় ভাই তৈমূর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব হওয়ায় রাজনীতি চাপে রয়েছেন। তৈমূর আলম খন্দকার জেলা বিএনপি সভাপতি, আহবায়ক ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন।

নাসিক নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই ঘটনায় খোরশেদকে মহানগর বিএনপি আহবায়ক কমিটি থেকেও বাদ দেয়া হয়। খোরশেদকে নতুন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক করার গুঞ্জন রয়েছে তৃণমূলের।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি পদ প্রত্যাশী নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ এবার আলোচনায় রয়েছেন মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। নারায়ণগঞ্জ শহর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। তার বাবা বিএনপির কমিশনার আজহার হোসেন ও চাচা বিএনপির সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি হতে বার বার ছিটকে পড়েন জোসেফ। টানবাজারের এক ক্ষমতাধর হিসেবে তার নাম রয়েছে শহরময় ছড়িয়ে। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাউসার আশা।

জনপ্রিয়

না.গঞ্জে মহাসপ্তমীতে মন্ডপে মন্ডপে ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলি

কালাম জাকির খোরশেদ জোসেফ নজরে

প্রকাশিত : ০১:৫২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রবীণ ও নবীনদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আলোচনা তুঙ্গে রয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকার আমলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে একাধিক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কেন্দ্র। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি যে কোন সময়ে বিলুপ্ত করতে পারে বলে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।

নতুন কমিটিতে ওয়ান শো ম্যান লিডার থেকে জনগণ ও তৃণমূল পছন্দের নেতাদের মূল্যায়ন করার প্রস্তাব করা হয়েছে কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে। মহানগর বিএনপিতে আবারো আলোচনায় রয়েছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম, কারাবন্দি জাকির খান, সর্বোচ্চ মামলার আসামী কাউন্সিলর খোরশেদ ও যুবদল নেতা জোসেফ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এক সময়ের তুখোড় সাবেক এমপি আবুল কালাম, সাবেক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও তৈমূর আলম খন্দকারকে নিয়ে এখনো আলোচনা রয়েছে। এদের মধ্যে মহানগর বিএনপিতে পদবিহীন হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন আবুল কালাম। জেলা বিএনপি আহবায়ক থেকে সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।

অন্যদিকে নাসিক নির্বাচন অংশ নেয়ায় জেলা বিএনপি আহবায়ক ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাসহ প্রাথমিক পদ থেকে বহিষ্কার হন তৈমূর আলম খন্দকার। দীর্ঘদিন তিনি পদবিহীন থাকলেও গত বছর তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব নির্বাচিত হন। এই তিন নেতা মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিএনপিতে অভিভাবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাঝে এখনো তাদের চাহিদা প্রকাশ্যে দেখা গেছে।

আহবায়ক কমিটির কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাথে একাধিকবার কথা বলেছেন তারেক রহমান। তার কাছে মহানগর বিএনপির প্রতিটি নেতাদের হালনাগাদ রয়েছে। আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর কোন কোন নেতা চাঁদা দাবি ও উত্তোলন করেছে, সকল তথ্য ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা অবগত রয়েছেন।

বর্তমান সময়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে বেধড়ক পিটুনি নিয়েও কেন্দ্রীয় নেতারা জেনেছেন। যার কারণে তিন দিন পর দলের মহাসচিব নিন্দা প্রকাশ করেছেন। বর্তমান আহবায়ক কমিটি নেতৃত্ব নিয়েও তারেক রহমান অবগত রয়েছেন।

জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিতে যাচ্ছেন। জনগণের রায় নিয়ে বিএনপি প্রতিটি আসনে জয়ী হওয়ার কৌশল নিতে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমলে যে কোন কর্মসূচি ও নেতা-কর্মীদের রাজপথে ধরে রাখার জন্য নতুন করে কমিটি সাজাতে যাচ্ছে তারেক রহমান। নারায়ণগঞ্জসহ প্রতিটি জেলা মহানগর কমিটিগুলোতে প্রবীণ ও নবীনদের নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হবে। যাতে কমিটিগুলোতে দ্বন্দ্ব কোন্দল ও বিবেদ সৃষ্টি না হয়।

এর সাথে পদবিহীন ও জেল জুলুম শিকার নেতাদের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে দেয়ার সিদ্ধান্তের দিক ছুটছে কেন্দ্র। নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সর্বোচ্চ মামলার আসামী হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও নাসিক ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার, বহিষ্কৃত নেতা এটিএম কামাল, মনিরুল ইসলাম সজল, রাফিউদ্দিন রিয়াদসহ কয়েকজন নেতা।

নতুন নেতৃত্বে মহানগর বিএনপিতে আলোচনায় রয়েছেন এককভাবে সাবেক এমপি আবুল কালাম। ক্লিন ইমেজের এই নেতা একাধিক বার এমপি হয়েছেন, শহর মহানগর বিএনপির সভাপতি ও আহবায়ক ছিলেন তিনি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে যখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয় তখন সেই প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন হাজী জালালউদ্দিন।

ছিলেন সংসদ সদস্য এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি। তার নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জে বিকাশ লাভ করেছিল বিএনপির রাজনীতি। জালাল হাজীর হাত ধরে রাজনীতিতে পথচলা শুরু হয়েছিল অনেক গুণী রাজনীতিবীদের। জালাল হাজীর মৃত্যুর পর তার ছেলে আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির হাল ধরেন এবং সদর-বন্দর আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বাবার ঐতিহ্য ধরে রেখে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এডভোকেট আবুল কালাম সে সময়ে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে এডভোকেট আবুল কালাম ধীরে ধীরে রাজনীতি থেকে দুরে সরে যেতে থাকেন।

২০১৭ সালে তিনি মহানগর বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন কিন্তু তার নেতৃত্বে মহানগর বিএনপি আন্দোলন সংগ্রামে শৃঙ্খলা থাকলেও তিনি তার বাড়ির চার দেয়ালে বন্দি করে ফেলেন। ফলে সরকার বিরোধী আন্দোলনে মুখ থুবরে পরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি। এর চেয়ে আরও বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছেন মহানগর বিএনপি। আহবায়ক কমিটি ও পদবিহীন একাধিক গ্রুপিং হওয়ার নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কোন্দল ও হামলা মামলায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। তাই এবার প্রবীণ নেতা আবুল কালামের নেতৃত্বে মহানগর বিএনপি চলতে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে জেলা ছাত্রদলের এক সময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী সভাপতি জাকির খান আলোচনায় এসেছেন। তার বাবা দৌলত খান তৎকালীন টানবাজার পতিতালয়ের গডফাদার ছিলেন বলে আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করেন। প্রায় ২০ বছর পলাতক জীবনের পর গত বছর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন তিনি। জাকির খানকে মহানগর বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখার জন্য মিছিল মিটিংও করছে তার সমর্থকরা।

নারায়ণগঞ্জের বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক সময়ের প্রাণকেন্দ্র ছিল নাসিক ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব থেকে আহবায়ক ও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক পদে দীর্ঘদিন।

টানা আওয়ামী লীগ সরকার আমলে আন্দোলন সংগ্রামে প্রায় ৯৩টির অধিক মামলার আসামী হয়েছেন খোরশেদ। এমনকি নাসিক নির্বাচনে তাকে পরাজিত করার জন্য মাঠে নামেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারপরও খোরশেদের জনপ্রিয়তায় সর্বোচ্চ ভোটে জয়ী হন তিনি। মহানগর যুবদলের একাধিক পদে দায়িত্ব পালনকালে শহর বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের শক্তিশালী রূপ দিয়েছেন খোরশেদ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরও মহানগর যুবদলের সভাপতি দায়িত্ব পালন নিয়ে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। বর্তমানে খোরশেদের বড় ভাই তৈমূর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব হওয়ায় রাজনীতি চাপে রয়েছেন। তৈমূর আলম খন্দকার জেলা বিএনপি সভাপতি, আহবায়ক ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন।

নাসিক নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই ঘটনায় খোরশেদকে মহানগর বিএনপি আহবায়ক কমিটি থেকেও বাদ দেয়া হয়। খোরশেদকে নতুন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক করার গুঞ্জন রয়েছে তৃণমূলের।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি পদ প্রত্যাশী নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ এবার আলোচনায় রয়েছেন মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। নারায়ণগঞ্জ শহর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। তার বাবা বিএনপির কমিশনার আজহার হোসেন ও চাচা বিএনপির সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি হতে বার বার ছিটকে পড়েন জোসেফ। টানবাজারের এক ক্ষমতাধর হিসেবে তার নাম রয়েছে শহরময় ছড়িয়ে। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাউসার আশা।