নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সাথে ঘনিষ্ঠতাসহ সাম্প্রতিক নান ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন খেলাফত মজলিসের নেতা জাহিদ হাসান। সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন ফেরদৌস, হেফাজতে নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়ালের ওপর হামলার চেষ্টাও চালান ফেরদৌস ও তার অনুসারীরা।
এসকল বিষয় নিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির জের ধরে জাহিদের ওপর হামলা চালিয়েছে মাওলানা ফেরদৌসের অনুগত ক্যাডাররা। এমনটাই অভিযোগ করেছেন তিনি।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় জাহিদ বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সোমবার রাতে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী জাহিদের ওপর হামলা চালায়। এসময় হামলা থেকে বাঁচতে দৌড় দিলে তার পিছু নেয় হামলাকারীরা। পরে চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকার পপুলার হসপিটালের তৃতীয় তলায় আশ্রয় নেন জাহিদ। হামলার গুরুতর আহত হন তিনি তবে প্রাণে বেঁচে যান।
পরবর্তীতে হামলার খবর পেয়ে পপুলার হসপিটাল থেকে জাহিদকে উদ্ধার করে নগরীর খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায় খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা।
হামলার ঘটনায় মহানগর হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমীর মাওলানা ফেরদৌসুর রহমানকে দায়ী করে জাহিদ বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের গুণ্ডা বাহিনী আমার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আজ রাত ৮ টায় আমাকে মারতে মারতে চাষাঢ়া শহীদ মিনার থেকে পপুলার হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়, এসময় প্রাণ বাঁচাতে আমি পপুলার হাসপাতালের তৃতীয় তলায় আশ্রয় নিই।
মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীরে আমাকে আঘাত করা হয়, কিল-ঘুষি এবং লাত্থি মারা হয়, তীব্র আক্রমণে আমার বমি চলে আসে। এই হামলার কঠিন জবাব দেয়া হবে।
এর আগেও নানা সময়ে ফেরদৌসের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সমালোচনা করায় ফোনে একাধিকবার ফেরদৌস ও তার অনুসারীরা হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল বলে জানিয়েছেন জাহিদ।
গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের ইসলামিক দলগুলো জুমার নামাজের পর ভারতে মহানবী (সাঃ) কে কটুক্তির প্রতিবাদে মিছিলের ডাক দিলে ঘটনাস্থলে নিজস্ব সন্ত্রাসীদের নিয়ে উপস্থিত হন মাওলানা ফেরদৌস। এসময় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে থাকেন। এসময় হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়ালের ওপর হামলা ও তাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন ফেরদৌস ও তার অনুসারীরা। ফলে কর্মসূচিটি পন্ড হয়ে যায় সেদিন।
ফেরদৌসের এমন কান্ডের পর নারায়ণগঞ্জের ইসলামিক দলগুলো ফেরদৌসের তীব্র সমালোচনা করতে থাকে। এ ঘটনার প্রতিবাদেই সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জাহিদ বলেছিলেন, নারায়ণগঞ্জের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমেদ্বীন,হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর এবং ডিআইটি মসজিদের খতীব আল্লামা আবদুল আউয়াল সাহেব এবং নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদের সেক্রেটারি মুফতি জাকির কাসেমী সাহেব এর সাথে চরম বেয়াদবি এবং ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।সমাবেশে বিশৃঙ্খলা এবং আলেম-ওলামাদেরকে মারধরের মত ঘৃণ্য আচরণে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। পলাতক গডফাদার শামীম ওসমান এর দোসরদেরকে নারায়ণগঞ্জের তাওহীদি জনতা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই সোমবার জাহিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী করেছেন খেলাফত মজলিসের নেতারা।
প্রত্যক্ষদর্শী তারেক বলেন, খেলাফত নেতা জাহিদ হাসানকে তারা চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মারতে মারতে পপুলার পর্যন্ত নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে হামলাকারী হেফাজতের সাবেক নেতা মাওলানা ফেরদৌসের মোবাইলে ফোন দিলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।