নারায়ণগঞ্জে সরকার বিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘ ১৬ বছর জেল, জুলুমের শিকার হয়েও রাজপথে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি। ছাত্রনেতা থাকা অবস্থা থেকেই নিজেকে মেলে ধরেন রনি। দক্ষ সংগঠক হিসেবে অল্প সময়েই নিজেকে জাহির করেন এই নেতা।
ছিলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সক্রিয় ভূমিকা পালন করায় গুমের শিকারও হতে হয়েছিল রনিকে। রিমান্ডে নির্যাতিত হয়েছেন, কারাভোগ করেছেন বহুবার, তবুও দমে যাননি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে ২০১৮ সালে ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় রনিকে। দুই দিন নিখোঁজ থাকার পরে ফতুল্লা থানায় অস্ত্রসহ গ্রেফতার দেখানো হয় রনিকে। সাড়ে চার মাস কারাভোগ করার পর মুক্তি পান রনি।
সরকার বিরোধী আন্দোলনে বরাবরই সামনের সারিতে ছিলেন রনি। জেলা ছাত্রদলের দায়িত্ব নেয়ার পরপরই জেলাজুড়ে ছাত্রদলকে শক্তিশালী করে তোলেন রনি। জেলাজুড়ে এসময় বিশাল কর্মী বাহিনী গড়ে তোলেন তিনি। দলের দুঃসময়ে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচি গুলোতে জনসমাগম ঘটাতে রনির ওপরই নির্ভরশীল ছিল জেলা ও মহানগর বিএনপি।
এছাড়াও ঢাকায় বিএনপির প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতেই হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত হতেন রনি। দক্ষ সংগঠক হিসেবে এসময় দলের শীর্ষ নেতাদের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন এই ছাত্রনেতা। ঢাকার নারায়ণগঞ্জসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে যেকোন কর্মসূচি থাকলেই ডাক পড়ত রনির।
২০২২ সাল থেকে সরকার বিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা হয়ে উঠলে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেন রনি। ছাত্রদল থেকে এসময় জেলা যুবদলের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পান রনি। জেলাজুড়ে দলকে সুসংগঠিত করে তোলার পাশাপাশি আন্দোলন সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এই নেতা।
২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। ৯ তারিখ রাতে যুবদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন রনি। রাতে নয়াপল্টন থেকে গ্রেফতার করা হয় রনিকে। জেলে থেকেও সেসময় অত্যান্ত দক্ষতার সাথে দল পরিচালনা করেন রনি। রনির নির্দেশে যুবদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী সেই সমাবেশে অংশগ্রহণ করে।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ শুরু হলে নয়াপল্টন এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রনি। মাঠে থেকে নেতাকর্মীদের মনেবল জোগান তিনি। ২৮ অক্টোবর পরবর্তী সময়ে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন রনি। সেসময় জেলাজুড়ে হরতাল ও অবরোধে রনির নির্দেশে যুবদল রাজপথে সক্রিয় ছিল। গ্রেফতার এড়িয়ে আত্মগোপনে থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করেন তিনি।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন একদফায় রুপ নিলে নারায়ণগঞ্জে ছাত্র জনতার পাশে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এই সাবেক ছাত্র নেতা। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী হামলা থেকে রক্ষা করতে নেতাকর্মী নিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে দাড়িয়েছিলেন রনি।